আমরা অনেকেই ট্রেন ভ্রমণ করে থাকি। সেক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রয়োজনে ট্রেনযাত্রা একটি নিরাপদ এবং আরামদায়ক যাতায়াত ব্যবস্থা।
এছাড়াও আপনার ব্যস্ত সময়কে কাজে লাগাতে ট্রেন জার্নির বিকল্প নেই। আসুন আজকের লেখায় জয়দেবপুর, কর্ণফুলী, রাজশাহী ও নরসিংদী ট্রেনের সময়সূচী এবং ভাড়া সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই।
জয়দেবপুর ট্রেনের সময়সূচী
জয়দেবপুর থেকে ঢাকা যাওয়ার ট্রেনে যাতায়াত করাটা অনেকটা সহজ এবং আরামদায়ক। সাধারণত জয়দেবপুর থেকে ঢাকা পর্যন্ত অনেকগুলো আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করে। সেক্ষেত্রে প্রত্যেকটি ট্রেনের সময়সূচী তুলে ধরা হল-
- আপনি যদি জয়দেবপুর থেকে ঢাকা যেতে চান, তবে একতা এক্সপ্রেস আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেনে ভ্রমণ করতে পারেন। এই ক্ষেত্রে একতা এক্সপ্রেস ট্রেনটি জয়দেবপুর স্টেশন থেকে ৬:৫০ মিনিটে ছেড়ে যায়। এছাড়াও ট্রেনটি ৮:১০ মিনিটে ঢাকা স্টেশনে পৌঁছে যায়।
- লালমনি এক্সপ্রেস আরেকটি আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেন। এটা জয়দেবপুর থেকে ঢাকা পর্যন্ত যায়। মূলত শুক্রবারে এই ট্রেনটির সাপ্তাহিক বন্ধ থাকে। এই ট্রেনটি জয়দেবপুর স্টেশন থেকে ১৮:৪৭ মিনিটে ছেড়ে যায় এবং ১৯:৫৫ মিনিটে ঢাকা স্টেশনে পৌঁছায়।
- জয়দেবপুর থেকে ঢাকা যাওয়ার একটি আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেন হল যমুনা এক্সপ্রেস। এই ট্রেনটির কোন সাপ্তাহিক ছুটির দিন নেই। এছাড়াও এই যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেনটি জয়দেবপুর স্টেশন থেকে ৬:২০ মিনিটে ছেড়ে যায় এবং ৭:৪৫ মিনিটে ঢাকা পৌঁছায়।
- পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনটি জয়দেবপুর থেকে ঢাকা পর্যন্ত যায়। তবে প্রতি মঙ্গলবার ট্রেনটি বন্ধ থাকে। এছাড়াও এই পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনটি জয়দেবপুর স্টেশন থেকে ২০:৩০ মিনিটে ছেড়ে যায়। আর ট্রেনটি ২১:৪০ মিনিটে ঢাকা স্টেশনে পৌঁছায়।
- সিল্কসিটি এক্সপ্রেস একটি আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেন। এই ট্রেনটি রবিবারে বন্ধ থাকে। মূলত এই ট্রেনটি ১২:২৫ মিনিটে জয়দেবপুর থেকে ছেড়ে যায় এবং ১৩:৩০ মিনিটে ঢাকা পৌঁছায়।
- হাওর এক্সপ্রেস ট্রেনে করে জয়দেবপুর থেকে ঢাকা পর্যন্ত যাওয়া যায়। প্রতি বৃহস্পতিবার এই ট্রেনটি বন্ধ থাকে। মূলত এই ট্রেনটি ১২:৪০ মিনিটে জয়দেবপুর স্টেশন ছেড়ে যায় এবং ১৩:৫০ মিনিটে ঢাকা পৌঁছে থাকে।
- টাঙ্গাইল মেইল এক্সপ্রেস ট্রেনটি জয়দেবপুর থেকে ঢাকা পর্যন্ত যায়। মূলত শুক্রবার এই ট্রেনের সাপ্তাহিক বন্ধের দিন। এই ট্রেনটি জয়দেবপুর থেকে ৮:২৮ মিনিটে ছেড়ে যায়। আর ট্রেনটি ৯:৩০ মিনিটে ঢাকা স্টেশনে পৌঁছায়।
- জয়দেবপুর থেকে ঢাকা পর্যন্ত আরেকটি ট্রেন হচ্ছে সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস। এটার শনিবারে সাপ্তাহিক বন্ধ থাকে। এই ট্রেনটি জয়দেবপুর স্টেশন ছেড়ে যায় ৯:১৫ মিনিটে এবং ১০:২২ মিনিটে ঢাকায় পোঁছে থাকে।
জয়দেবপুর টু ঢাকা ট্রেনের ভাড়ার তালিকা
আসন বিভাগ | টিকিটের মূল্য |
---|---|
শোভন | ৪৫ টাকা |
শোভন চেয়ার | ৫০ টাকা |
প্রথম আসন | ৯০ টাকা |
স্নিগ্ধা | ১১৫ টাকা |
এসি | ১২৭ টাকা |
কর্ণফুলী ট্রেনের সময়সূচী
সাধারণত কর্ণফুলী মেইল এক্সপ্রেস ট্রেনটি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা রুটে চলাচল করে থাকে। এটা এই রুটে চলাচলকারী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মেইল ট্রেন। বর্তমানে এই ট্রেনে প্রচুর লোক চলাচল করে। কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ট্রেনে চড়ে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা এবং ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম রুটে চলাচল করা যায়। মূলত এটা বাংলাদেশ রেলওয়ের একটি মেইল ট্রেন। আর প্রতিদিন এই ট্রেনে চড়ে অনেক মানুষ ঢাকা হতে চট্টগ্রাম এবং চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় চলাচল করে থাকে। এছাড়াও এই ট্রেনটি চট্টগ্রাম যাত্রাপথের স্টেশনগুলোতে থেমে থাকে। কর্ণফুলী ট্রেনের সময়সূচী হল-
- এই কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ট্রেনটি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে সকাল ১০টার দিকে ছেড়ে আসে এবং ১৯টা ৪৫ মিনিটের নির্ধারিত সময়ে ঢাকা এসে পৌঁছে। অনেকসময় বিভিন্ন কারণবশত ট্রেন আসতে লেট হলে কিংবা মেইল ট্রেন বলে নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে একটু লেট হয়ে থাকে। এছাড়াও এই মেইল ট্রেনের সাপ্তাহিক কোন ছুটির দিন নেই।
- সাধারণত এই ট্রেনটি ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ৮:৩০ মিনিটে ছেড়ে যায়। আর ট্রেনটি আনুমানিক ১৮টার মধ্যে চট্টগ্রামে গিয়ে পৌছায়। মূলত এই ট্রেনটিরও কোন সাপ্তাহিক ছুটি নেই।
কর্ণফুলী ট্রেনের ভাড়ার তালিকা
আসন বিভাগ | টিকিটের মূল্য |
---|---|
শোভন | ২৮৫ টাকা |
শোভন চেয়ার | ৩৪৫ টাকা |
প্রথম শ্রেণী | ৪৬০ টাকা |
রাজশাহী থেকে ঢাকা ট্রেনের সময়সূচী
রাজশাহী থেকে ঢাকা ট্রেনের সময়সূচী তুলে ধরা হল-- বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনটি রাজশাহী থেকে ঢাকার পথে যাত্রা করে থাকে। এই ট্রেনটি রাজশাহী থেকে সকাল ৭:০০ টায় যাত্রা শুরু করে এবং বেলা ১১:৩০-এ কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছে থাকে। প্রতি শুক্রবার বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনের সাপ্তাহিক ছুটি থাকে।
- ধূমকেতু এক্সপ্রেস রাজশাহী থেকে ঢাকা রুটে চলাচল করে থাকে। এই ট্রেনটি রাত ১১টা ২০ মিনিটে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে ছেড়ে যায়। আর ট্রেনটি ভোর ৪টা ৪৫ মিনিটে ঢাকা কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছায়। এছাড়াও ট্রেনটির সাপ্তাহিক ছুটির দিন হল বৃহস্পতিবার ।
- পদ্মা এক্সপ্রেস রাজশাহী এবং ঢাকার মধ্যকার একটি সেরা ট্রেন পরিষেবা। মূলত ট্রেনটি বিকাল ৪:০০ টায় রাজশাহী স্টেশন থেকে ছেড়ে যায় এবং ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ৯:৪০-এ পৌঁছায়। এই পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনটির সাপ্তাহিক ছুটির দিন মঙ্গলবার।
- সিল্ক সিটি এক্সপ্রেস রাজশাহী থেকে ঢাকা রুটে চলাচল করা একটি জনপ্রিয় ট্রেন সার্ভিস। এই ট্রেনটি সকাল ৭:৪০-এ রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে ছেড়ে যায়। আর পরবর্তীতে ট্রেনটি বেলা ১:৩০-এ ঢাকা কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছায়। এছাড়াও প্রতি রবিবার সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনটির অফ ডে।
রাজশাহী থেকে ঢাকা ট্রেনের ভাড়ার তালিকা
আসন বিভাগ | টিকিটের মূল্য |
---|---|
শোভন চেয়ার | ৩৪০ টাকা |
স্নিগ্ধা | ৫৭০ টাকা |
এসি সিট | ৬৮০ টাকা |
এসি বার্থ | ১০২০ টাকা |
নরসিংদী টু ঢাকা ট্রেনের সময়সূচী
নরসিংদী স্টেশন আন্তঃনগর ট্রেনের সময়সূচী- ৭২১ মহানগর এক্সপ্রেস আন্তঃনগর ট্রেনটি নরসিংদী থেকে ঢাকার পথে চলাচল করে। প্রতি রবিবার এই ট্রেনটির সাপ্তাহিক ছুটির দিন। মূলত ট্রেনটি বিকেল ৫ঃ৪৭ মিনিটে নরসিংদী স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। পরবর্তীতে আনুমানিক রাত ৭.১০ মিনিটের মধ্যে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশনে পৌঁছায়।
- ৭৮২ কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস নরসিংদী থেকে সন্ধ্যা ৬:৪৫ মিনিটে ঢাকার দিকে যাত্রা আরম্ভ করে এবং রাত ৮:১০ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছে। এই ট্রেনটির অফ ডে হচ্ছে প্রতি শুক্রবার।
নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশন মেইল এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচী
- ঢাকা মেইল এক্সপ্রেস ট্রেন নরসিংদী থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। আর এই ট্রেনটি ৭:২০-এ ঢাকাতে প্রবেশ করে থাকে।
- সুরমা মেল যেটা নরসিংদী থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে সকাল ৬:১৭ মিনিটে ছেড়ে যায়। পরবর্তীতে ট্রেনটি আনুমানিক ৯:১৫ মিনিটে ঢাকায় পোঁছে।
- কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ট্রেনটি নরসিংদী স্টেশন থেকে ৪:১০ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। আর রাত ৭:00-টার সময় ঢাকাতে পৌঁছায়।
নরসিংদী টু ঢাকা ট্রেনের ভাড়ার তালিকা
আসন বিভাগ | টিকিটের মূল্য |
---|---|
শোভন | ৬০ টাকা |
শোভন চেয়ার | ৭০ টাকা |
প্রথম আসন | ৯০ টাকা |
প্রথম বার্থ | ১৩৫ টাকা |
স্নিগ্ধা | ১৩৩ টাকা |
এসি সিট | ১৫৬ টাকা |
এসি বার্থ | ২৩৬ টাকা |
ট্রেন-ভ্রমণ নিয়ে কিছু সাধারণ প্রশ্ন
১. ট্রেনযাত্রা কতটা নিরাপদ?
অন্যান্য যানবাহনের তুলনায় ট্রেন ভ্রমণ অনেকটাই নিরাপদ ও আরামদায়ক।
২. ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কতদিন আগে পাওয়া যায়?
সাধারণত রেলপথের যাএীরা তাদের ভ্রমণ দিনের ৫ দিন আগে থেকে আগাম টিকিট কাটতে পারবেন।
৩. ট্রেনযাত্রার টিকিট কি কোন কারণবশত ফেরত দেওয়া যায়?
এই ক্ষেত্রে ৪৮ ঘণ্টার আগে টিকিট ফেরত দিলে নির্দিষ্ট পরিমান চার্জ কেটে টিকিট ফেরত নেওয়া হয়।
৪. ট্রেন ভ্রমণের কতক্ষণ আগে রেলস্টেশনে উপস্থিত হওয়া উচিত?
সাধারণত ট্রেনের টিকিটের মধ্যে যে সময়সূচী দেওয়া আছে, সেই অনুযায়ী ৩০ মিনিট আগে স্টেশনে উপস্থিত হওয়া ভালো।
৫. অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কোন ওয়েবসাইটে গিয়ে কাটা যায়?
অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার জন্বাংযলাদেশ রেলওয়ের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে (eticket.railway.gov.bd) লগ ইন করুন।পরিশেষ
ট্রেনযাত্রা খুবই উপভোগ্য এবং আরামদায়ক। আপনি যে কোন ছুটির সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে ট্রেনে করে বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনার ট্রেনযাত্রা হোক নিরাপদ এবং নির্বিঘ্ন।