মোবাইলের চার্জ তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায় কেন? - মোবাইলে চার্জ ধরে রাখার ১০টি উপায়

মোবাইলের চার্জ তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায় কেন? - মোবাইলে চার্জ ধরে রাখার ১০টি উপায়

ফোনের ব্যাটারী বাচানোর কয়েকটি উপায় রয়েছে তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো আপনার মোবাইলের ব্যাটারিটি কত এম্পিয়ার এর এবং কিভাবে তা আপনার মোবাইলকে ম্যানেজ করতেছে। আমরা সকলেই মোবাইল ফোন কেনার সময় অবশ্যই ব্যাটারি ব্যাকআপ এর কথা চিন্তা করে মোবাইল কিনে থাকি । এবং প্রথম অবস্থায় আমরা খুব ভালো পরিমাণে মোবাইলের ব্যাটারিতে ব্যাকআপ পেয়ে থাকি, কিন্তু এই ফোন কেনার কয়েক মাসের মধ্যে আমাদের অনেকের ব্যাটারি চার্জ খুবই কম থাকা বা বাজে ব্যাকআপ দেওয়া শুরু হয়। মোবাইলের চার্জ ধরে রাখার কিছু টিপস রয়েছে জানিনা আলোচনা করা হলো।

১. সব সময় মোবাইলের ডাটা কালেকশন অফ করে রাখুন :

আমরা প্রায় সময় কারণ বা অকারণে মোবাইলের ডাটা কালেকশন অন রাখি এতে করে মোবাইলের দ্রুত সমস্যা দেখা দিতে পারে কারণ : তখন মোবাইলের মধ্যে অধিক মাত্রায় নেটওয়ার্কের রেঞ্জ বিক্রিয়া তৈরি হয় এর ফলে আপনার ফোনের চার্জ তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যেতে পারে। আমরা সকলেই জানি যে নরমাল হবে মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে সেটির মধ্যে চার্জ অনেক কম খরচ হয়, কিন্তু যখন সেটিকে ইন্টারনেটের মধ্যে কালেকশন দেয়া হয় তখন এই নেটওয়ার্কের কারণে মোবাইলে চার্জ তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যেতে পারে।

. অপ্রয়োজনীয় সফটওয়্যার ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন :

আমরা কারণ-অকারণে অনেক সময় মোবাইলের মধ্যে অনেকগুলি অ্যাপস ডাউনলোড করে ইন্সটল করে রাখি, এতে করে অপ্রয়োজনীয় apps গুলো ব্যাকগ্রাউন্ড এর মধ্যে নেটওয়ার্ক এবং ব্যাটারি দুটোই ইউজ করতে থাকে। ফলে আপনার মোবাইলটি স্লো হয়ে যায় এবং দ্রুত চার্জ শেষ হওয়ার মতো ঘটনা ঘটতে পারে। এজন্য আপনার মোবাইল ফোনে অতিরক্ত বা অপ্রয়োজনীয় apps থাকা কোন ভাবেই উচিত নয়। কোন ফিচার বা অ্যাপটি আপনার ফোনের ব্যাটারি খেয়ে নিচ্ছে সেটাই আগে সনাক্ত করা দরকার। একারণে প্রথমেই চলে যান সেটিংসে। 

এরপর ব্যাটারি অপশনে গিয়ে নিজেই দেখে নিন কোন অ্যাপটি আপনার ফোনের ব্যাটারি লাইফ শুষে নিচ্ছে। ফোনের চার্জ যখন ২০ শতাংশে গিয়ে ঠেকবে তখন লো পাওয়ার মোড অপশনটি ব্যবহার করুন। এটি ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ রিফ্রেশ ও অটোমেটিক ডাউনলোড করা থেকে ফোনকে বিরত রাখে। লো পাওয়ার মোড অপশনটি চালু করতে সেটিংস থেকে ব্যাটারিতে যেতে হবে।

৩. অটো লক ব্যাবহার করুন:

মোবাইলে স্কিন ব্রাইটনেস টাইম নিয়ন্ত্রণ করুন এবং ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে আপনার মোবাইলটি লক করার চেষ্টা করুন,  স্ক্রিনে আলো জ্বলা মাত্রই আপনার ব্যাটারি থেকে চার্জ ক্ষয়ে যায়। তাই চার্জ বাঁচাতে দ্রুত ফোনটি লক করা প্রয়োজন। অটো লক অপশনটি চালু করতে সেটিংস থেকে ডিসপ্লে অ্যান্ড ব্রাইটনেসে গিয়ে অটো লক অপশনটিতে ক্লিক করুন। এর ফলে যত তাড়াতাড়ি আপনার স্কিনের আলো অফ হয়ে যাবে বা ব্রাইটনেস বন্ধ হয়ে যাবে তত বেশি আপনার ব্যাটারির মধ্যে চার্জ ব্যাকআপ পাবেন। 

৪. লোকেশন সার্ভিস বন্ধ রাখুন :

লোকেশন হচ্ছে এন্ড্রয়েড মোবাইলের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ কিন্তু মাঝে মাঝে কোন প্রয়োজন ছাড়াই এই মোবাইলের লোকেশন সার্ভিসটি সারাক্ষণ অন হয়ে থাকে। এর ফলে আপনার ব্যাটারি চার্জ দ্রুত নষ্ট হয়ে যেতে পারে এছাড়াও,  এমন কিছু অ্যাপ আছে যেগুলো ব্যবহার না করলেও সর্বক্ষণই সেগুলো ব্যবহারকারীর লোকেশন ট্র্যাক করে থাকে। 

এতে ব্যাটারি খরচের পরিমাণ বেড়ে যায়। লোকেশন ট্র্যাক অপশনটি বন্ধ করতে সেটিংসে গিয়ে প্রাইভেসিতে ক্লিক করে লোকেশন সার্ভিসে যেতে হবে। সেখানে গিয়ে প্রতিটি অ্যাপের ক্ষেত্রে ‘হোয়াইল ইউজিং’ অপশনটি চালু করতে হবে।

৫. ই-মেইলের ‘পুশ’

দুটি উপায়ে ফোনে ই-মেইল চেক করা যায়। একটি হলো পুশ আরেকটি হলো ফেচ। পুশ অপশন চালু করা থাকলে যখনই কোনো ই-মেইল আসবে তাতক্ষিণকভাবে তা ডাউনলোড হয়ে যাবে। অপর দিকে, ফেচ প্রতি ১৫ মিনিট পর পর পরীক্ষা করবে কোনো ই-মেইল বার্তা এসেছে কিনা।

তাই ফেচ অপশনটি চালু থাকলে তা সব সময়ই ই-মেইলের খোঁজ করে না। এতে ব্যাটারির খরচ কম হয়। মোবাইলে ফেচ অপশনটি চালু করতে সেটিংসে থেকে অ্যাকাউন্ট অ্যান্ড পাসওয়ার্ডসে যেতে হবে। সেখানে গিয়ে প্রতিটি ইমেইল অ্যাকাউন্টের জন্য ফেচ নিউ ডাটা অপশনটি সিলেক্ট করতে হবে।

৬. অটো ব্রাইটনেস বন্ধ করুন :

ব্যাটারি বাঁচাতে অটো ব্রাইটনেস অপশনটি সিলেক্ট করতে পারেন। এতে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ব্রাইটনেসের কারণে মোবাইলের চার্জ ক্ষয় হবে না। স্ক্রিনের ব্রাইটনেস কমাতে সেটিংসে গিয়ে জেনারেল অপশনে ক্লিক করতে হবে। এরপরে অ্যাক্সেসিবেলিটি থেকে ডিসপ্লে অ্যাকোমোডেশনে গিয়ে অটো ব্রাইটনেস অপশনটি চালু করে দিতে হবে।

৭. অপ্রয়োজনে ওয়াইফাই অন রাখা :

ডাটা খচর করলে শুধু ইন্টারনেটের বিলই বাড়ে না ব্যাটারির খরচও বাড়ে। কারণ নেটওয়ার্ক খুঁজে পেতে মোবাইল ডাটা প্রচুর ব্যাটারি খরচ করে ফেলে। তাই ওয়াইফাই চালু করেই ইন্টারনেট ব্যবহার করলে আপনার ব্যাটারিতে যে খরচ কম হবে ব্যাপারটা কিন্তু তেমন নয়, মোবাইল ডাটা ব্যবহারের সময় যে পরিমাণ ব্যাটারি খরচ হয় ।

ওয়াইফাই ব্যবহার করার সময়ও সেই পরিমাণ ডাটা খরচ হয়ে থাকে, ফলে আপনার মোবাইলের চার্জ একই গোল দিতে ফুরায়। জন্য প্রয়োজন ছাড়া আপনার ওয়াইফাইটি অফ করে রাখুন। 

৮. অটো রিফ্রেশ

অনেক অ্যাপ আছে যেগুলো প্রতিনিয়ত তাদের কনটেন্ট রিফ্রেশ ও আপডেট করে থাকে। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে সেটিংস থেকে জেনারেলে গিয়ে ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ রিফ্রেশে ক্লিক করুন। অটো রিপ্রেস বন্ধ করতে চাইলে আপনি সেটিং এর মত প্রবেশ করুন এরপর অ্যাপস সিলেক্ট করে ব্যাকগ্রাউন্ড ডাটা পারমিশন অফ করে দিন, এতে করে ব্যাকগ্রাউন্ডে চলা অপ্রয়োজনীয় apps আপনার মোবাইলের ডাটা এবং ব্যাটারি ব্যাকআপ দুটো থেকে আপনার ফোনকে বাঁচিয়ে রাখবে। 

৯. নেটওয়ার্ক সার্চিং বা ফ্লাইট মোড :

মাঝে মাঝে দেখা যায় যে আমরা এমন কোন জায়গায় রয়েছি যেখানে নেটওয়ার্ক খুবই কম পরিমাণ রয়েছে ফলে দেখা যাচ্ছে মোবাইলে সবসময় নেটওয়ার্ক সার্চিং করতে শুরু করে, এটি ফোনের ব্যাটারির চার্জ দ্রুতই কমে যায়। কোথাও নেটওয়ার্ক কভারেজ না থাকলে ফোনের ফ্লাইট মোড অপশনটি চালু করুন। এতে করে নেটওয়ার্ক খুঁজতে ফোন এর ব্যাটারির খরচ কমে যাবে । 

ফ্লাইট মোড ই বেস্ট কারণ আপনি নেটওয়ার্ক ইস্যুর জন্য যদি মোবাইলটি অপমান করতে চান তাহলে উল্টো আপনার আরও বেশি চার্জ নষ্ট হয়ে যাবে। এই সিম্বল নিয়মগুলো আপনি মেনে চলতে পারলে আপনার ব্যাটারি চার্জ একটু হলেও উন্নতি ঘটবে। 

১০. কম্পিউটারে ফোন চার্জ :

অনেকেই কম্পিউটারের মাধ্যমে ফোনে চার্জ দিয়ে থাকেন। কিন্তু কম্পিউটার বন্ধ করা অবস্থায় ফোন তাতে সংযুক্ত থাকলে ব্যাটারি লাইফ উল্টো ক্ষয় হয়ে যায়। তাই কম্পিউটার চালু করা অবস্থাতেই চার্জ দিন। এছাড়াও কম্পিউটার দিয়ে ফোনের মধ্যে চার্জ দিলে ফোনের মধ্যে চার্জ খুব কম হয় এবং কম থাকে, কারণ কম্পিউটার বা ল্যাপটপে থাকা ইউএসবি পোর্টে খুব কম পরিমাণে এম্পিয়ার দেওয়া থাকে, এর ফলে মোবাইল চার্জ সঠিক ভাবে হতে পারে না এবং চার্জও কম থাকে। 

মোবাইল ফাস্ট করার উপায়। মোবাইল স্লো হওয়ার কারণ কি

নরমাল চার্জার দিয়ে চার্জ বা হালকা চার্জ :

মাঝেমধ্যে মনে হয় যে যে কোন যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে আপনার শখের মোবাইল ফোনের অরিজিনাল চার্জারটি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তখন আপনি থার্ড পার্টি কিংবা লোকাল নরমাল চার্জার কিনে সেই চার্জারটি দিয়ে ফোনটিকে চার্জ করা শুরু করে দেন এর ফলে। আপনার মোবাইল সঠিক ভাবে চার্জ হতে পারে না এবং দ্রুত চার্জ শেষ হয়ে যায়। 

মন্তব্য : পরিশেষে আমি আপনাকে পরামর্শ দিতে পারি যে, সবসময় আপনি অরিজিনাল ব্যাটারি, অরিজিনাল চার্জার, ব্যাবহার করুন। এবং অতিরিক্ত অধিক মোবাইল চার্জার থেকে বিরত থাকুন কারণ অতিরিক্ত মোবাইল চার্জার ফলে মোবাইলে ব্যাটারি দ্রুত নষ্ট হয়ে যায় ফলে আপনার মোবাইলে চার্জ খুবই কম থাকে। 

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম